‘বীরগাঁথা’য় মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন্ত স্পর্শ থাকবে সংরক্ষিত

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম। এ জেলার মুক্তিযোদ্ধারা অসীম বীরত্ব ও সাহসিকতায় পাকবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে হানাদার মুক্ত করে কুড়িগ্রামকে। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বীরবিক্রম এবং বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা ঐশ্বর্যময় ও গৌরবান্বিত করেছে এ জেলাকে।

কিন্তু বয়সের ভারে ন্যুব্জ মুক্তিযোদ্ধারা ক্রমশ আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। দিনে দিনে কমে যাচ্ছে বীরদের সংখ্যা। এমন চিন্তা থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে একটি ডকুমেন্টারি তৈরির উদ্যোগ নেয় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভিন ও তার টিম। অনুধাবন করে যে, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে আমরা যাদের হারিয়েছি তাদের স্মৃতি সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলেও এখনও যেসব বীর জীবিত আছেন তাদের স্মৃতি সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব।

মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি অম্লান রাখতে যে হাতে অস্ত্র ধরে তারা সম্মুখসমরে শত্রুর মোকাবেলা করেছেন, রক্তাক্ত করেছেন, রক্তাক্ত হয়েছেন, সেই দুই হাতের স্পর্শের ছাপ, তাদের তথ্যসহ ছবি, স্বহস্তে স্বাক্ষর, মুক্তিযুদ্ধের গল্পসংকলনের মাধ্যমে একটি ডকুমেন্টারি ‘বীরগাঁথা’ তৈরি করা হয়। ‘বীরগাঁথা’ ডকুমেন্টারিতে জেলার তালিকাভুক্ত ২৭৩০ জন জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধার দুই হাতের ছাপসহ তাদের তথ্য এবং ১৫৭১ জন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার তথ্যসহ মোট ৪২৭৩ জন মুক্তিযোদ্ধার তথ্য সংরক্ষিত হয়েছে।

ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপ, মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ছবি, মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও সম্মুখ সমরের গল্পসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানবে এ ডক্যুমেন্টারি থেকে। যা তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে ও জাগ্রত রাখতে সহায়তা করবে।

এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভিন বলেন, ডকুমেন্টারির প্রতিটি খণ্ডের প্রতি পাতায় মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন্ত স্পর্শ রয়েছে। ৬টি ভলিউমে ১৩২টি খণ্ডে প্রস্তুতকৃত ডকুমেন্টারিতে কোনো দলিল বা তথ্যের ছায়ালিপি ব্যবহার করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘বীরগাঁথা’ ডকুমেন্টারিটি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করবেন।

(অন্য মাধ্যমে প্রকাশিত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *