জলেশ্বরী

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি::

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে আবারো কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপরে থাকা অবস্থায় আবারো পানি বৃদ্ধিতে চরম বিপাকে পড়েছে জেলার আড়াই শতাধিক চরের প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ। প্লাবিত হয়ে পড়ছে নতুন নতুন এলাকা। এ অবস্থায় টানা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দি অবস্থায় থাকা এসব মানুষের দুর্ভোগ চরম সীমায় পৌঁছেছে। বৃষ্টিতে দুর্ভোগ বেড়েছে উঁচু বাঁধ ও পাকা সড়কে পলিথিনের তাবু টানিয়ে বসবাসকারী বন্যা দুর্গতদেরও। এদিকে রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাটে তিস্তার ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে। বালির বস্তা ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের চেরাগির চরের নিজাম উদ্দিন, আলী হোসেন জানান, এই চরের পার্শ্ববর্তী কোন উঁচু জায়গা নেই। এ জন্য নৌকার মধ্যে ২৫ দিন ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছি। রান্না করার উপায় নেই, ঘরে শুকনো খাবার নেই। এই অবস্থায় আবারো পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। খুব বিপদে আছে। সরকারী বা বেসরকারী কোন ত্রাণ সহায়তা এখনও পাননি বলেও জানান তারা।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, রোববার সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ৬ ঘন্টার ব্যবধানে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে এবং স্থানীয়ভাবে ভারী বৃদ্ধিপাত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশংকার কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, জেলায় এ পর্যন্ত ১৩২ টি আশ্রয় কেন্দ্রে কমবেশি বন্যা কবলিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। আরো ৪৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্র আছে। নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপরে থাকা অবস্থায় আবারো বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে চরাঞ্চলের মানুষদের ্এসব আশ্রয় কেন্দ্রি সরিয়ে নেয়া হবে। সরকারীভাবে খাদ্য সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। আমাদের কাছে আরো ২৩০ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লাখ টাকা মজুদ আছে। বন্যা কবলিতদের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version