জলেশ্বরী

ত্রাণের অপ্রতুলতা কুড়িগ্রামে দুর্ভোগে বানভাসীরা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ::

টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমা,বাড়ার মধ্যে থাকলেও জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্তিতির কোন উন্নতি হয়নি। দীর্ঘ ২৬ দিন ধরে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার অববাহিকার রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী, উলিপুর, কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী ও ফুলবাড়ী উপজেলার প্রায় তিন শতাধিক চরাঞ্চলের মানুষ ৩ লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌছেছে। বিশেষ করে দুর্গম চর ও দ্বীপচরগুলোর মানুষজনের ঘরে এখনও এক কোমর, এক গলা পানি থাকায় ছোট ছোট নৌকায় বসবাস করছে এসব এলাকার মানুষজন। প্রায় ৪ সপ্তাহ ধরে এভাবে বসবাস করায় খাদ্য সংকট তীব্র হয়ে উঠছে। পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো খাদ্যের সংকট তাদের জীবনকে আরো দুর্বিসহ করে তুলেছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বড় নৌকা দেখলেই ত্রাণের আশায় ছুটাছুটি করছে বন্যা দুর্গতরা। এদিকে বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে পানি বাহিত নানা রোগ।
উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের মশালের চরের সাজেদা বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরে নৌকার মধ্যে খেয়ে না খেয়ে বসবাস করলেও এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ পাইনি। পানিতে থাকতে থাকতে হাতে পায়ে ঘা হয়েছে। আবার খাবার পানি নাই। এই বন্যার পানি যে কতদিনে নেমে যাবে, তারপর রক্ষা।
উলিপুরের বেগমগন্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: বেলাল হোসেন জানান, সরকারী যে ত্রাণ পেয়েছি তা সকল বন্যা কবলিত পরিবারকে দেয়া সম্ভব হয়নি। বন্যা কবলিত মানুষজন খুবই দু:খ-কষ্টে দিন পার করছে। তাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
সরকারী ভাবে এ পর্যন্ত ১৭০ মেট্রিক টন চাল, জিআর ক্যাশ ৯ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিতরণ করা হলেও বেশির ভাগ বানভাসী হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্যে জুটছে না তা।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, ত্রাণের পাশাপাশি চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে জেলার ৪ লাখ ২৮ হাজার ৫২৫ পরিবারকে ভিজিএফ’র ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে। ত্রাণের পাশাপাশি এই চাল বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজনের উপকারে আসবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানির তোড়ে রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট এলাকার ক্রস বাঁধটি ধ্বসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বালির বস্তা ফেলে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

Exit mobile version