কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ::

গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে ধরলার তীরবর্তী এলাকার ঘর বাড়ীতে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ১৮শ হেক্টর আমন ক্ষেতসহ ২১শ ৪ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি দ্রুত নেমে না গেলে এসব ফসল নষ্ট হওয়ায় আশংকা রয়েছে।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, পর পর তিন দফা বন্যায় আমন বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। পানি নামার ধার-দেনা করে অন্য এলাকা থেকে চারা কিনে এনে দুই বিভাগ জমিতে লাগিয়েছিলাম। সেই আমন ক্ষেতও গত দুই আগে পানিতে তলিয়ে গেছে। দু’চার দিনের মধ্যে পানি না নামলে আমন ক্ষেত সম্পুর্ণরুপে নষ্ট হয়ে যাবে।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের আবুল হোসেন জানান, আমরা কৃষক মানুষ। ধান আবাদ না হলে খাবার উপায় নাই। দীর্ঘ বন্যায় দুই দফা আমন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আবারও চারা লাগিয়েছি। কিন্তু সেই জমিতে এখন আমন ক্ষেতের উপর ৪ থেকে ৫ ফুট পানি। এবারও ক্ষেত নষ্ট হলে বাঁচার উপায় থাকবে না।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো: শামসুদ্দিন মিয়া জানান, পর পর ৩ দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জেলার কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। সেই সাথে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রাও পুরন করা হয়েছিল। নতুন করে নিমজ্জিত হয়ে পড়া আমন ক্ষেত থেকে দ্রæত পানি নেমে না গেলে ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
অন্যদিকে পানি বাড়ার সাথে সাথে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদের অন্তত ২৫টি পয়েন্টে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে। জিও ব্যাগ ও বালির বস্তা ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, নদ-নদীর বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬ টার রিপোর্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদ-নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। কিছু এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *