কুড়িগ্রামের উলিপুরে জমির ক্ষতিপুরণের দাবিতে কৃষকদের মানব বন্ধন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি::

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বুড়িতিস্তা ক্যানেল পুনঃ খননের আওতায় পড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির প্রায় চার শতাধিক কৃষক ক্ষতিপুরণের দাবিতে মানব বন্ধন করেছে। ক্যানেলের ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পড়া তাদের ব্যক্তি মালিকানা জমি দ্রুত অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরন প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা।

আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে উলিপুর উপজেলা শহরে মসজিদুল হুদার সামনে কুড়িগ্রাম-উলিপুর সড়কে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এ মানববন্ধনে অংশ নেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের দাবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে হাতে হাত রেখে অবস্থান করে।

এসময় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পক্ষে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গোলাম মোহাম্মদ সরওয়ারদী, আবদুল হাই সরকার ও নূর ইসলাম শেখ প্রমূখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন মৌজা দিয়ে প্রবাহিত বুড়িতিস্তা ক্যানেল” ২০১৯ সালে সরকারের ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পূণঃ খনন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নিয়োজিত ঠিকাদার এক প্রকার জোড় পূর্বক পুনঃখনন কাজ শুরু করেন। ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তি হওয়ায় পূণঃ খনন কাজ এখনো অসমাপ্ত রয়েছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, জেলার উলিপুর ও চিলমারি উপজেলার বিভিন্ন মৌজা দিয়ে প্রবাহিত মোট ৩১.৫০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বুড়িতিস্তা ক্যানেলের প্রায় ১৯ কিলোমিটার তৎকালীন সরকার ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে অধিগ্রহণ করেন। পরে জমির প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করে বুড়িতিস্তা ক্যানেল পূণঃ খনন কাজ করেন।

এরপর থেকে অবশিষ্ট ১২.৫০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বুড়িতিস্তা ক্যানেল ব্যক্তিমালিকানাধীনই থেকে যায়। দীর্ঘদিন পর গত ২০১৯ সালে বর্তমান সরকার জমি অধিগ্রহণ না করেই ক্যানেল পূণঃখনন করায় প্রায় ৪ শতাধিক কৃষক পরিবার মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। শুধু তাই নয় এমন অনেক পরিবার আছেন যাদের সারা জীবনের আয়-রোজকার দিয়ে স্বাবলম্বী হবার আশায় বুড়িতিস্তায় জমি কিনেছিল। কিন্তু বুড়িতিস্তা পুনঃখননে আজ তারা পথের ফকির।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মালিকানাধীন জমি খনন করার তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখনো তা অধিগ্রহণ করা কিংবা ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যাবস্থা করা হয়নি। উল্টো ব্রিটিশ আমল থেকে মালিকানাধীন এসব সম্পত্তির খতিয়ানভুক্ত মালিক গণ এখনো যথারীতি বাংলাদেশ সরকারকে ভূমি কর দিয়ে আসছে।

বক্তারা এ দুর্বিষহ অবস্থা থেকে রক্ষার জন্য অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং উল্লেখিত পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করে প্রকৃত মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য জোর দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *