জলেশ্বরী

আয়না- সঙ্গীতা ইয়াসমিন

শাড়ি পরা শেষ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চোখের কোণে সুরমার টান দিয়ে মাথায় আঁচলটা টেনে দিলেন লতিফা। দরজার অদূরে দাঁড়িয়ে আফজাল খাঁ সবই লক্ষ্য করলেন আর মনে মনে ভাবলেন, মেয়েরা গয়না পেলে সব বয়সেই খুশি হয়। নারী শাড়ি আর গহনার সাথে এক অদৃশ্য নাড়ীর বন্ধন আছে বলেই মনে হয়। যেকোনো নারীকেই গহনায় তাই অপরূপা লাগে। লতিফা বানুর গায়ের রঙ কালো হলেও শারীরিক সুষুমায় ছিল অনন্য সৌকর্য। চোখদুটো যেন মায়ানদী, সেই চোখে যখন সুরমার টান পড়ত তখন সে ছল ছল করে উঠত, ভেসে যেত ভালোবাসার কলতানে।

যদিও আফজাল খাঁ কোনোদিন সামনাসামনি তাঁর রূপের প্রশংসা করেননি। যাকে কোনোদিন মন থেকেই মেনে নিতে পারেননি, একদিনের জন্যও চোখে চেয়ে কথা বলেননি অথচ, সেই নারী কী পরম মমতায় আগলে রেখেছিল তাঁর ঘর-সংসার-সন্তান। পরম ভক্তিও করত আফজাল খাঁকে। আজ সেকথা ভেবে বুকের ভেতর কেবল হাহাকার জমে খাঁ সাহেবের।

লেখক- কবি, চিত্রশিল্পী, গল্পকার ও উন্নয়নকর্মী

Exit mobile version