দমে না যাওয়া মেয়েরা তবে ভয়ঙ্কর!

বীথি সপ্তর্ষি:
যে মেয়েরা একটু বাইরে যেত, নাচ-গান করত, ছেলে বন্ধু থাকত, সাজ-গোজ করত, লাল লিপস্টিক পরত, রাত করে বাসায় ফিরত, জোরে হাসত, পরিপাটি কাপড়চোপড় পরত মোদ্দা কথা নিজের ইচ্ছেমতো চলত তাদেরকে একসময় বেশ্যা বলা হত। সবাইই বলত।

কাওকে দমাতে, ভেঙ্গে দিতে ‘বেশ্যা’ শব্দের জুড়ি নাই। এই এক শব্দ শুনলেই ‘ভদ্র ঘরের মেয়েরা’ একদম চুপসে যেত।

তারপর বহু জল গড়াল। এখন বাম রাজনীতি করা, নারীবাদী, প্রগতিশীল নারী-পুরুষ একটু আউটস্ট্যান্ডিং মেয়েদের হিউমিলিয়েট করতে ‘বেশ্যা’ বলে। এবং সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, আপনি ভাবতে পারেন তারা হয়ত বেশ্যাদের খারাপ ভাবছেন তাই তাদের পেশাটাকে গালি হিসেবে ব্যবহার করছেন!
কিন্তু এরকম ভেবে থাকলে আপনারা বোকা। বেশ্যাদের নিয়ে তাদের কোনই সমস্যা নাই, বেশ্যাগিরি করা নিয়েও কোন সমস্যা নাই। তাদের সমস্যা ‘বেশ্যাদের চেয়েও খারাপ’ যারা, তাদের নিয়ে। তারা কম কাপড়চোপড় পরে, ব্রা-বিকিনি পরে ছবি তোলে, সেই ছবি আপলোডও করে। তারা প্রেম করে, প্রেম ভাঙ্গে এবং আবার নতুন প্রেম করে। একবার বিয়ে বা প্রেম করে ফেললে মার-ধোর খেয়েও জন্ম-জন্মান্তর সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখে না। সুতরাং, তারা বেশ্যার চেয়েও খারাপ।

বেশ্যাকে খারাপ বললে না হয় এই জ্ঞানীগুণীদের জিজ্ঞেস করা যেত, কেন এদের পুনর্বাসন করেন না, বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করেন না? হিউম্যান ট্রাফিকিং বন্ধ করেন না, ফুটপাতের বাচ্চা মেয়েগুলোকে সুস্থ পরিবেশ দেন না? বেশ্যাদের নিয়ে যেহেতু তাদের সমস্যা নাই, সবকিছু ঠিক আছে। সেহেতু কোন প্রশ্নই করা যাচ্ছে না।

বেশ্যাদের চেয়েও খারাপ মেয়েদের নিয়ে হয়েছে বিপদ। এদের নিয়ে তো কিছুই করা যায় না। এরা কোনকিছুতেই থেমে যাচ্ছে না, দমে যাচ্ছে না। নিদেনপক্ষে কান্নাকাটি তো করা উচিত, সেটাও করছে না। আফসোস!

বীথি সপ্তর্ষি
লেখক, অনুবাদক ও সাংবাদিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *