কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে মারিজা বেগম নামে ৬ সন্তানের জননী নিখোঁজের ৩ মাস অতিবাহিত হলেও খোঁজ না মেলায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে নিখোঁজের পরিবার।এরপর সেই নারীর স্বামীর হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে নিখোঁজের পরিবারের সদস্যরা। থানা থেকে লিখিত অভিযোগ প্রত্যাহারের চাপ সৃষ্টি করেছে স্বামী আলমগীর হোসেন। নিখোঁজ হওয়া মাকে খুঁজে না পেয়ে অমানবিক দিন কাটছে নিখোঁজ নারীর অবুঝ সন্তানরা। ঘটনাটি শহরতলির সওদাগরপাড়া গ্রামের।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৬ বছর আগে একই এলাকার মৃত-তোতা মিয়ার পুত্র আলমগীর হোসেনের সাথে বিয়ে হয় মারিজা বেগমের। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য মারিজা বেগমের উপর শুরু হয়েছিল অমানুষিক নির্যাতন। নেশা এবং জুয়া খেলায় আসক্ত স্বামী আলমগীর নিজে উপার্জন না করে স্ত্রী মারিজা বেগমকে দিয়ে উপার্জন করতে বাধ্য করতেন। স্বামীকে জুয়া খেলায় টাকা না দিলে প্রায়শই গৃহবধূ মারিজা বেগমকে নির্যাতনের করতেন।
তাদের ঘরে ৬টি সন্তান জন্ম হয়। ৩ মাস পূর্বে মারিজা বেগমে ৬ষ্ঠ সন্তান জন্মে। সন্তান জন্মের ৬দিন যেতে না যেতে কাজে না যাওয়ায় মারিজা বেগমকে প্রচন্ড মারধর করে তার স্বামী।
নিখোঁজের ভাই মেছের আলী জানায়, আমার বোনের উপর ভগ্নিপতি আলমগীর প্রতিদিন হাতের কাছে যা পেতো তা দিয়েই পিটাতো। বোনের মাথায় ও গোপনাঙ্গে আঘাত করতো। সন্তান জন্মের ৬ দিন পর মারধর করেছে বলে আমরা জেনেছি। পরদিন আলমগীর আমাকে জানায়, তোমার বোন কোথায় গেছে আমি কিছু জানি না। তার এমন কথায় আমার সন্দেহ হচ্ছে আমার বোনকে সে খুন-গুম করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে দ্রুত আমার বোনকে উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।
গৃহবধূ মারিজা বেগমের ফুফু বেগম আরা জানান আমার ভাগ্নি মারিজাকে কি কারণে নির্যাতন করা হতো এমন প্রশ্ন করলে আলমগীর একদিন আমার গালেও ঘুষি মারে। এতে আমার মুখ থেকে প্রচুর রক্তপাত হয়। সে এলাকার কাউকেই ভয় পেতো না। সে আবারো আমাকে হুমকি দিচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, আলমগীর তার স্ত্রীকে প্রতিদিন নির্যাতন করে আসছিল সবাই জানে। সর্বশেষ সে নিজের স্ত্রীর গোপনাঙ্গেও পাশবিক নির্যাতন চালায়। তার চিৎকারে গ্রামের মানুষ পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছিল। পুলিশ আগে থেকে জোরালো পদক্ষেপ নিলে সে আজ নিখোঁজ হতো না।
এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ শাহরিয়ার অভিযোগের প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন- নিখোঁজ হওয়া গৃহবধূর বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্ত আলমগীরের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।