উলিপুর প্রতিনিধি ::
কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রতারনার মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হওয়ার ১ মাস পর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থেকে প্রতারক চক্রের ওই তিন সদস্যকে আটক করে উলিপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় আটককৃতদের বুধবার (২৭ নভেম্বর) আদালতে প্রেরণ করা হয়।
জানা গেছে, ছয় মাস পূর্বে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর বাজারে জনৈক সৈয়দ আলীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রতারক চক্রটি নিজেদের ভূয়া নাম, ঠিকানা ব্যবহার করে ও করতোয়া কারিগরী প্রশিক্ষন নামে কর্মহীন মহিলাদের দর্জি প্রশিক্ষনের ভূয়া প্রকল্প খুলে বসেন। এরপর প্রতারনার মাধ্যমে উপজেলার দশটি ইউনিয়নের ৬৫জন মহিলা কর্মীকে সহকারী প্রশিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেন। এই প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রুপ গড়ে তোলা হয়। একজন সহকারী প্রশিক্ষক ৩০-৩৫ জনের ১০-১২টি করে গ্রুপ তৈরি করেন। তাদের প্রাথমিক ভাবে প্রশিক্ষনের নামে কাঁচি ও ফিতা সরবরাহ করা হয়। এরপর সেলাই মেশিন দেয়ার কথা বলে ওই সকল গ্রুপের সাত হাজার মহিলার কাছ থেকে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে ১৩শ ৩০ টাকা করে মোট ৯৩ লাখ ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়। এ ঘটনায় বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মাষ্টারপাড়া গ্রামের সহকারী প্রশিক্ষক বিজলী বেগম বাদী হয়ে গত ২৯ অক্টোবর পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতারনা করার অভিযোগে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এরপর সহকারী পুলিশ সুপার আল ইমরানুল আলম ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রায় এক মাস প্রযুক্তির মাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে মঙ্গলবার গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা থেকে তিনজনকে আটক করেন। আটককৃতরা হলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শান্তিরাম মাষ্টারপাড়া গ্রামের রবিন্দ্রনাথ সরকারের পুত্র রুবেল কুমার সরকার (৩২), উত্তর মরুয়াদহ গ্রামের জাফর আলীর পুত্র খোরশেদ আলম (৪১) ও মোকছেদুল ইসলাম (৩৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ টাকা, ১টি সেলাই মেশিন, ২টি ট্যাব, কয়েকটি মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ্য, ওই প্রতিষ্ঠানের নাম করতোয়া কারিগরী প্রশিক্ষন প্রকল্প, আইএইচ.আর.জে.এস. প্রধান কার্যালয়, ৫০/ডি ইনার সার্কুলার ভিআইপি রোড, নয়া পল্টন, ৫ম তলা, ঢাকা-১০০০, রেজিঃ নং-১০২৭২-২০১৯ ব্যবহার করেন যার পুরোটাই ছিল ভূয়া।
উলিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রতারনার মামলায় আটক আসামীদেরকে বুধবার বিকালে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একই ঘটনায় ২০১৭ সালে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানায় প্রতারনার মামলা রয়েছে। তিনি আরও জানান, মামলাটির মূল রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে নামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামীদের সনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের লক্ষে আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।